নিজস্ব সংবাদদাতা : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের গণহত্যার মুলহোতা পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে ঘুষ ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রেতাত্মা খ্যাত সমবায় মাফিয়া আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের পাসপোর্ট ব্লকেড সহ তার বিরুদ্ধে এখনো মামলা দায়ের ও দুদক অনুসন্ধান শুরু না করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খ্রীষ্টান সম্প্রদায় ও সমবায়ীগণ।পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হারুনর রশীদ এর সাথে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন।
কেননা, আগষ্টিন পিউরিফিকেশন হচ্ছেন আসাদুজ্জামান খান কামালের অন্যতম ডোনার। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে আগষ্টিন ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে একটি সূত্র দাবি করেছে।আবার আসাদুজ্জামান খান কামালের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে তিনি দু’টি সমবায় অবৈধভাবে দখলে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। তার পৃষ্ঠপোষকতায় আইন আদালতকে নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন।তার অন্যায়কে সমর্থন না করায় খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের ও সমবায় অঙ্গনের অনেকের ওপর চালিয়েছেন অত্যাচারের স্টীম রোলার। আসাদুজ্জামান খান কামালের আশির্বাদ থাকায় ভয়ে কেউ মুখ খুলেননি। আগষ্টিন পিউরিফিকেশন সমবায় অঙ্গনের মূর্তিমান আতংক।পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে শলাপরামর্শ করছেন সমবায় মাফিয়া আগষ্টিন পিউরিফিকেশন।
৪ আগষ্ট অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে আসাদুজ্জামান খান কামালের নিদের্শে এবং আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের তত্ত্বাবধানে তার লালিত ও পালিত ক্যাডার বাহিনী আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের ক্যাডার বাহিনীর সাথে মিশে গিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর প্রাণঘাতি হামলা চালিয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের একটি নির্ভরযোগ্য সুত্রের দাবি ।জানা গেছে, ৪ আগস্ট কাওরান বাজার এলাকায় সংঘর্ষে আহত হলে আব্দুল্লাহ সিদ্দিকীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি রংপুরে। তিনি হাজারীবাগের রায়ের বাজার থাকতেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। বড় ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী।অপর একটি সুত্রের দাবি, অন্যদিকে একই দিনে ফার্মগেট এলাকায় সহিংসতায় মারা গেছেন মো. তাহিদুল ইসলাম (২২)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকাল সাড়ে ৫টায় মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাহিদুল ইসলামের বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়ায়। তার বাবার নাম মান্নান সরদার। তিনি মহাখালী ডিওএইচএস একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তিনি মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় থাকতেন।উপরোক্ত মো. তাহিদুল ইসলাম (২২) এবং আব্দুল্লাহ সিদ্দিকীর হত্যাকান্ডে আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ফার্মগেট এলাকার স্থানীয় লোকজন দাবি করেছেন। মো. তাহিদুল ইসলাম এবং আব্দুল্লাহ সিদ্দিকীর হত্যাকান্ডে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আগষ্টিন পিউরিফিকেশনসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে।আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন মুখ খুলতে শুরু করেছেন।সম্প্রতি জীবন স্নাল ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় বলেন,খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৮০০ কোটি আত্মসাতের মুলহোতা আগষ্টিন যেন দেশ থেকে পালাতে না পারেন।তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
অন্যদিকে এবিষয়ে জ্যাকসন গোমেজ একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টটি নিজের ফেসবুক টাইম লাইনে শেয়ার করেছেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি আলবার্ট পি. কস্টা। পোস্টটি হুবহু উপস্থাপন করা হলো-পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হারুনর রশীদ এর সামনে বক্তব্য রাখছেন সমবায় মাফিয়া আগষ্টিন পিউরিফিকেশন।
”খ্রীষ্টান সোসাইটির সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি,তথাকথিত বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও স্বঘোষিত বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাবু মার্কুস, পংকজ গিলবার্ট, আগষ্টিন পিউরিফিকেশন সহ এদের গ্যাং কে বয়কট করুন। বিগত স্বৈরাচার সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে এরা অবৈধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সহযোগিতায় নানা অপকর্ম করেছে। দেশের সর্ববৃহৎ সমবায় সমিতি দি খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড ও দি মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: এবং দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ(কালব) থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশ খ্রিষ্টান কল্যান ট্রাস্ট এর সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমাদের খ্রিষ্টান কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে সাধারণ খ্রিষ্টভক্তদের পুঁজি করে সরকারি নানাবিধ সুবিধা তারা ভোগ করেছে। এই চক্রের মূল হোতা আগষ্টিন পিউরিফিকেশন।
এদের এইসব অপকর্মের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। বিভিন্ন সমিতি থেকে তাদের সদস্য পদ বাতিল করে। অনেকে জেল খেটেছে। কয়েকজনের মামলা এখনো চলমান আছে।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পালিয়ে যাওয়ার পর সকল অপকর্ম ধরা পড়ার ভয়ে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন এবং ম্যানুয়েল বাপ্পি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে দেওয়া বিবৃতি।
ছাত্র আন্দোলনে বিরুদ্ধে এরা একটা বিবৃতি প্রকাশ করেছে যা আমাদের খ্রিষ্টান কমিউনিটির সাথে সাংঘর্ষিক। এমনকি এরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর জন্য ফেসবুকে বিভিন্ন পেজে এবং গ্রুপে নানা রকম গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে।তাদের এসব অপকর্মের যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে। খুব শিগগিরই এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।প্রিয় খ্রিষ্টভক্তগণ, নিজেদের অধিকার ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সচেতন হোন। এদের বয়কট করুন”।উল্লেখিত বিষয়ে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন এবং ম্যানুয়েল বাপ্পির বক্তব্য জানতে তাদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তাদের কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।
Leave a Reply