নিজস্ব প্রতিনিধি , পলাতক সাবেক পররাস্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের ঘনিষ্ঠ সহোচর ও ব্যবসায়িক পার্টনার ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। যেখানে হাছান মাহমুদসহ আওয়ামী লীগের নেতারা গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্যে বনে বাদারে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেখানে নিশাদ দস্তগীর বঙ্গভবনে উপদেষ্টা পরিষদের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন।আবার রাজকীয় নৈশ ভোজে অংশ নিয়েছেন। বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
নিশাদ দস্তগীর হচ্ছেন সাবেক পররাস্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের ঘনিষ্ঠ সহোচর ও ব্যবসায়িক পার্টনার। তার মাধ্যমেই হাছান মাহমুদ তার অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করেছে। এমনকি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন পৈশাচিক কায়দায় দমনে নিশাদ দস্তগীরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
৫ই আগষ্ট ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে রঙ বদলে ফেলেছেন অনেক পরিচিত মূখ। এরা সুবিধাভোগী, যুগে যুগে ক্ষমতার পাদপিঠে থাকার জন্যই এরা বার বার রঙ বদলায়। এই ধরনের একটি চরিত্র গোলাম দস্তগীর নিশাদ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য এই ধরনের অসংখ্য বর্ণচোরার অবৈধ কার্যকলাপ আর অবাধ লুণ্ঠনের কারনেই ৭৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি দল আওয়ামী লীগ আজ ইতিহাসের সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
পতিত সরকারের উচ্চ মহলে পরিচিত মূখ, হাইব্রিড আওয়ামী লীগার নিশাদ দস্তগীর একই সাথে একটি বিদেশী বিশেষ সংস্থার এজেন্ট হিসেবেও কাজ করেন। উনি বাংলাদেশী বংশোদভ’ত একজন বৃটিশ পাসপোর্টধারী । বাংলাদেশ বা যুক্তরাজ্যে এই ভদ্রলোকের কোন বৈধ ব্যবসা নাই।আবার দৃশ্যত: কোন চাকরিও নেই। তিনি নিজেকে কখনো মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, কখনো রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর ভাগিনা, কখনো সাবেক পররাস্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বল্যবন্ধু পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ৬ মাস ধরে হোটেল ইন্টার কন্টিনেণ্টালের ৩২৬ নম্বর রুম, প্রেসিডেন্টসিয়াল স্যুইটে অবস্থান করেছেন এই নিশাদ দস্তগীর। যতটুকু জানাযায় এই রুমের ভাড়া দেয় সেই বিশেষ বিদেশী সংস্থাটি।
এর আগেও নিশাদ দস্তগীর ঢাকার হোটেল সোনারগাঁ এবং রিডিসন ব্লো হোটেলে সেই সংস্থাটির টাকায় মাসের পর মাস অবস্থান করেছেন এবং নানা অপকর্ম চালিয়েছেন। এই হোটেল রুমগুলো হচ্ছে রাষ্ট্র এবং সমাজের উচ্চ মহলের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির মনোরঞ্জন ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের আস্থানা। ঢাকাই সিনেমার বিভিন্ন নায়িকা ও সুন্দরী মহিলাদের এই বিশেষ হোটেল রুমগুলোতে ছিল নিরপদ বিচরণ। গত ছয় মাসে ইন্টার কন্টিনেণ্টালের ৩২৬ নম্বর স্যুইটে যার নিয়মিত যাতায়ত করেছেন তাদের মধ্যে হাছান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদেরসহ অনেকের চেহারা হোটেলের সিসিটিভির ফুটেজ দেখলেই পাওয়া যাবে।
এ্কটি বিদেশী রাষ্ট্রের পেইড এজেন্ট হবার পরও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আবাসস্থল বঙ্গভবনে রয়েছে নিশাদ দস্তগীরের অবাধ বিচরণ। অতিসম্প্রতি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ১৩ উপদেষ্টার শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে বঙ্গভবনে দেখা গেছে নিশাদ দস্তগীরকে। বঙ্গভবনে বসেই সে বিদেশী গোয়েন্দাদেরকে তথ্য দিয়েছে। কোন যোগ্যতায় সে সেখানে উপস্থিত ছিল তদন্ত করলেই বেরিয়ে যাবে থলের বিড়াল।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এই নিশাদ দস্তগীর ও ব্যবসায়ী আমিন হেলালীকে সামনে রেখে তাদের নামে গ্রীন টিভি নামে একটি বেসরকারী টেলিভিশনের লাইসেন্স নেন। পরবর্তীতে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ ও ব্যবসায়ী রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের কাছে চ্যানেলটির শেয়ার বিক্রি করে হাছান মাহমুদ ও নিশাদ অন্তত: ৪০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন।
ঢাক বা লন্ডনে নিশাদ দস্তগীরের কোন বৈধ ব্যবসা নাই। অথচ বিলাস বহুল জীবন যাপন করেন নিশাদ দস্তগীর। এর পিছনে রয়েছে পতিত সরকারের উপর তলার রাজনৈতিক নেতা এবং অসৎ ব্যবসায়ীদের মনোরঞ্জন, অর্থ পাচার, বিদেশী সংস্থার এজেন্ডা বাস্তবায়নের কুকর্ম। বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অবিলম্বে বিষয়টি নজরে না নিলে এই সংকট সময়ে রাষ্ট্রের অনেক ক্ষতি করে ফেলতে পারে নিশাদ দস্তগীরের মত হাইব্রিড বর্ণচোরারা বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।