নাটোরের নলডাঙ্গায় মো. হিমেল হোসেন (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনের ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। এছাড়া নিহত হিমেলের বন্ধু পার্থসহ সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। নিহত হিমেল উপজেলার পিপরুল গ্রামের মো. ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। আটক সন্দেহভাজনরা হলো একই এলাকার পার্থ, মেহেদি, সুজন ও শিমুল। এদের মধ্যে পার্থ ও মেহেদী নিহত হিমেলের সহপাঠী বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এটিএম মাইনুল ইসলাম।
নিহতের স্বজন ও থানা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে পার্থ নামের এক সহপাঠী তার বন্ধু হিমেলকে মোবাইল ফোনে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পুরোনো ও পরিত্যক্ত ভবনে ডেকে নেয়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে তারা থানা পুলিশকে জানান। পরে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে হিমেলের বন্ধু পার্থকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পুরোনো ও পরিত্যক্ত ভবন থেকে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে হিমেলের অপর বন্ধু মেহেদী এবং একই এলাকার বাসিন্দা শিমুল ও সুজন নামে আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে নিহত হিমেলের মাথা, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে মাথায় আঘাত ও চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত জখম করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া তার মুখের ভেতর পলিথিন কাগজ ঢোকানো ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে শুক্রবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকাণ্ডের পুরো রহস্য উদঘাটন না হলেও প্রাথমিকভাবে প্রেমঘটিত কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।