প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ৪:০৪ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ১৪, ২০২৪, ৫:৫১ এ.এম
নাজমুল-মুশফিকের ব্যাটিং বীরত্বে মোহনীয় জয়
ক্রীড়া ডেস্ক
ইনিংসের প্রথম বলেই লিটন দাস বোল্ড। তৃতীয় ও ষষ্ঠ ওভারে যথাক্রমে সৌম্য সরকার এবং তাওহিদ হৃদয়ও আউট। মাদুশাঙ্কা ও মাদুশানের আঘাতে ছয় ওভারের মধ্যে ২৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ‘নিরাপদ আশ্রয়’ খুঁজছে। এ সময় অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘বাতিঘর’ হওয়ার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে দুজনের ৬৯ রানের জুটি ভাঙে মাহমুদউল্লাহর আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে। ৩৭ বলে ৩৭ তার পুঁজি। এরপর এক জুটিতেই বাজিমাত। ম্যাচসেরা নাজমুলের তৃতীয় ওয়ানডে শতক ও পঞ্চম উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তার ১৭৫ বলে ১৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩২ বল বাকি থাকতে শ্রীলংকার ২৫৫ রান টপকে যায় বাংলাদেশ।
বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলংকাকে ছয় উইকেটে হারিয়ে ১-০তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। চার মেরে তিন অঙ্ক ছোঁয়া নাজমুলের ব্যাট থেকেই আসে জয়সূচক বাউন্ডারি। নাজমুল ও মুশফিকের ম্যাচ জেতানো যুগলবন্দি পঞ্চম উইকেটে শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ও সব দল মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। লাহিরু কুমারাকে চার মেরে ১০৮ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে শতক পূর্ণ করা নাজমুল ১২৯ বলে ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংস সাজানো ১৩ চার ও দুই ছক্কায়।
ক্যারিয়ারে ৪৯তম ফিফটি তুলে নেওয়া মুশফিক ৮৪ বলে আট চারে করেন ৭৩* রান। বাংলাদেশের পঞ্চম অধিনায়ক হিসাবে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পেলেন নাজমুল। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিও তিনি করেছিলেন শ্রীলংকার বিপক্ষে। প্রিয় প্রতিপক্ষ লংকানদের বিপক্ষে আগের দুই ওয়ানডেতেও ফিফটি ছিল নাজমুলের। একই ভেন্যুতে আগামীকাল সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলংকা ভালো শুরু করে ৮৪ রানে তিন উইকেট হারায় ১৪ ওভারের মধ্যে। তিনটি উইকেট নেন তরুণ ডান-হাতি পেসার তানজিম হাসান। অভিষ্কা ফার্নান্ডোকে (৩৩) দিয়ে শুরু। বাংলাদেশের জন্য সেটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। কেননা অভিষ্কা বিধ্বংসী হয়ে উঠতে শুরু করেছিলেন। পাথুম নিশাঙ্কা (৩৬) তানজিমের শর্ট বলের শিকার হন। তৃতীয় স্লিপের কাছাকাছি ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। সাদিরা সামারাবিক্রমাকে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন তানজিম। ১৪তম ওভারের শুরুতে শ্রীলংকা ৮৪ রানে তিন উইকেট হারায়।
চতুর্থ উইকেটে ৪৪ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ও চারিত আসালাঙ্কা (১৮)। বাঁ-হাতি আসালাঙ্কাকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মেন্ডিসের আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে পঞ্চম উইকেট হারায় শ্রীলংকা। তাসকিনের বলে মিড-অফে সহজ ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন। ৬৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা মেন্ডিস ৭৫ বলে ৫৯ রান করেন পাঁচটি চার ও একটি ছয়ের সহায়তায়। পঞ্চম উইকেটে জানিথ লিয়ানাগের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস।
১০ ওভারেরও কম বাকি থাকতে শ্রীলংকা ষষ্ঠ উইকেট হারায়। এবার তাসকিনের শিকার হন হাসারাঙ্গা। থার্ড ম্যানে তাওহিদ হৃদয় ক্যাচ নেন। হাসারাঙ্গার অবদান ১৪ বলে ১৩। এর আগে সফরকারীদের ইনিংসে দ্বিতীয় ফিফটি (৫০ বলে) পূর্ণ করেন জানিথ লিয়ানাগে। এটি তার টানা তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৬৯ বলে ৬৭ রান (তিনটি চার ও দুটি ছয়) করে সাজঘরে ফেরেন লিয়ানাগে। শরীফুলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন লংকান ব্যাটার। সাত বল বাকি থাকতে শ্রীলংকা অলআউট হয় ২৫৫ রানে। তানজিমের মতো তাসকিন এবং শরীফুলও তিন উইকেট নেন। এই ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয় মোস্তাফিজুর রহমানকে।
© Copyright ২০২৪ | দৈনিক প্রতিদিনের সময় | Developed By: OPERATOR IT